শ্রীশ্রী গীতার ধ্যান - Gita dhyan
গীতার ধ্যানের প্রাথমিক উদ্দেশ্য হলো একটি মনোমুগ্ধ অবস্থায় চিন্তা এবং মনের সামঞ্জস্য সৃষ্টি করা। এটি আমাদের মনকে শান্ত ও আনন্দময় করতে পারে এবং একটি সামরিক স্থিতি সৃষ্টি করতে পারে যা আমাদের সমস্ত সমস্যা এবং তাড়াতাড়ির মধ্যে সমস্যাগুলি থেকে আলাদা করে দেয়।
গীতার ধ্যানের মাধ্যমে আমরা শক্তিশালী ভাব ও সংস্পর্শ স্থাপন করতে পারি যা আমাদের সামগ্রিক উন্নতি ও উদ্বেগময় জীবনের প্রতিটি দিককে সুন্দর করে তুলতে সাহায্য করে। এটি আমাদের মনকে শান্ত ও স্থির রাখতে পারে এবং সমস্ত চ্যালেঞ্জ এবং দুর্ঘটনার মধ্যে একটি মাধ্যম সরবরাহ করতে পারে।
গীতার ধ্যান অনেক সময় একটি মেধার সাধনার অংশ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। গীতা গাওয়া, গীতা শুনা বা গীতার লেখা পড়া এবং বৈশিষ্ট্যপূর্ণ মনোযোগে গীতার অংশ হতে পারে। ধ্যানের মাধ্যমে আমরা আমাদের মনের অন্যান্য চিন্তাগুলি থেকে সরাসরি সংযুক্ত হয়ে থাকি এবং এটি আমাদের চিন্তা, সৃজনশীলতা এবং আনন্দের মধ্যে সমন্বয় সৃষ্টি করে।
গীতার ধ্যান আমাদের মানসিক ও মানসিক উন্নতি করতে পারে এবং এটি সাধারণত মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যকে উন্নত করার একটি উপায় হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। গীতার ধ্যান একটি প্রাকৃতিক মেধার সাধনার অংশ হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে যা আমাদের জীবনে সংজাত সমস্যা, তাড়াতাড়ি এবং মানসিক চাপ থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করে।
সমস্তটির মধ্যে গীতার ধ্যানের উপকারিতা পাওয়া যায় যখন আমরা এটি নিয়মিত পরিকল্পনা করি এবং মানসিক ও মানসিক পরিষ্কারতা ও শান্তির জন্য সময় দিয়ে গীতায় লিপ্যান্ত হই। গীতার ধ্যান আমাদের মনকে একটি আনন্দময়, সমগ্র, এবং উন্নত জীবনের সাথে সংযুক্ত করতে সহায়তা করে।
ওঁ
পার্থায় প্রতিবোধিতাং ভগবতা নারায়ণেন স্বয়ম্
ব্যাসেন গ্রথিতাং পুরাণমুনিনা মধ্যে মহাভারতম্৷
অদ্বৈতামৃতবর্ষিণীং ভগবতীমষ্টাদশাধ্যায়িনীম্
অম্ব ত্বামনুসন্দধামি ভগবদ্ গীতে ভবদ্বেষিণীম্ ॥১॥
পার্থায়, প্রতিবোধিতাম্, ভগবতা, নারায়ণেন, স্বয়ম্,
ব্যাসেন, গ্রথিতাম্, পুরাণমুনিনা, মধ্যে, মহাভারতম্,
অদ্বৈত-অমৃত-বর্ষিণীম্, ভগবতীম-অষ্টাদশ-অধ্যায়িনীম্
অম্ব, ত্বাম্, অনুসন্দধামি, ভগবদ্ গীতে, ভব-দ্বেষিণীম্ ॥১॥
সরলার্থ:- হে জননি ভগবদ্ গীতে মহাভারতের মধ্যে প্রাচীন মুনি ব্যাসদেবকর্তৃক গ্রথিত, স্বয়ং ভগবান নারায়ণকর্তৃক পার্থকে উপলক্ষ্য করে সম্যক্ রূপে বিজ্ঞাপিত, পুনর্জন্মনাশকারিণী অদ্বৈত তত্ত্বরূপ-অমৃতবর্ষিণী অষ্টাদশ-অধ্যায়রূপিণী ভগবতী তোমাকে আমি মনে মনে চিন্তা করিতেছি ॥১॥
নমোহস্তু তে ব্যাস বিশালবুদ্ধে ফুল্লারবিন্দায়্তপত্রনেত্র৷
যেন ত্বয়া ভারততৈলপূর্ণঃ প্রজ্বালিতো জ্ঞানময়ঃ প্রদীপঃ ॥২॥
নমঃ, অস্তু, তে, ব্যাস, বিশালবুদ্ধে, ফুল্ল-অরবিন্দ-আয়্ত-পত্র-নেত্র,
যেন, ত্বয়া, ভারত-তৈল-পূর্ণঃ, প্রজ্বালিতঃ, জ্ঞানময়ঃ, প্রদীপঃ ॥২॥
সরলার্থ:- হে বিকশিত পদ্মপত্রের ন্যায় চক্ষুবিশিষ্ট মহাবুদ্ধি ব্যাসদেব, তোমায় নমস্কার, তোমাকর্তৃক মহাভারতরূপ তৈলদ্বারা পরিপূর্ণ জ্ঞানময় প্রদীপ প্রজ্বালিত হয়েছে ॥২॥
প্রপন্ন পারিজাতায় তোত্রবেত্রৈকপাণয়ে৷
জ্ঞানমুদ্রায় কৃষ্ণায় গীতামৃতদুহে নমঃ ॥৩॥
প্রপন্ন-পারিজাতায়, তোত্র-বেত্র-এক-পাণয়ে,
জ্ঞান-মুদ্রায়, কৃষ্ণায়, গীতা-অমৃত-দুহে, নমঃ ॥৩॥
সরলার্থ:- শরণাগতের পক্ষে পারিজাত (কল্পবৃক্ষ) তুল্য, অশ্বচালনার জন্য এক হস্তে চাবুক ও লাগামধারী, জ্ঞানমুদ্রাবিশিষ্ট-হস্ত [অর্জুনকে উপদেশ দিবার জন্য তর্জনী ও অঙ্গুষ্ঠাঙ্গুলি মিলিত করে যে মুদ্রা তা-ই জ্ঞানমুদ্রা ], গীতারূপ অমৃত দোহনকারী শ্রীকৃষ্ণকে নমস্কার ॥৩॥
সর্বোপনিষদো গাবো দোগ্ধা গোপালনন্দনঃ
পার্থো বৎসঃ সুধীর্ভোক্তা দুগ্ধং গীতামৃতং মহৎ ॥৪॥
সর্ব-উপনিষদঃ, গাবঃ, দোগ্ধা, গোপাল-নন্দনঃ,
পার্থঃ, বৎসঃ, সুধীঃ, ভোক্তা, দুগ্ধম্, গীতা-অমৃতম্, মহৎ ॥৪॥
সরলার্থ:- উপনিষদসকল গাভীস্বরূপ গোপালনন্দন শ্রীকৃষ্ণ দোহনকর্তা, অর্জুন বৎস (বাছুর) তুল্য, গীতার অমৃতরূপ বাণী উৎকৃষ্ট দুগ্ধসদৃশ, পণ্ডিতব্যক্তিগণ এ দুগ্ধ পানকর্তা ॥৪॥
বসুদেবসুতং দেবং কংসচাণূরমর্দনম্৷
দেবকীপরমানন্দং কৃষ্ণং বন্দে জগদ্ গুরুম্ ॥৫॥
বসুদেব-সুতম্, দেবম্, কংস-চাণূরম্-অর্দনম্,
দেবকী-পরম-আনন্দম্, কৃষ্ণম্, বন্দে, জগদ্ গুরুম্ ॥৫॥
সরলার্থ:- বসুদেবের পুত্র, কংস ও চাণূর দৈত্যের বিনাশকারী, দেবকীর পরম আনন্দপ্রদ, জগদ্ গুরু দীপ্তিমান্ শ্রীকৃষ্ণকে বন্দনা করি ॥৫॥
ভীষ্মদ্রোণতটা জয়দ্রথজলা গান্ধারনীলোপলা
শল্যগ্রাহবতী কৃপেণ বহনী কর্ণেন বেলাকুলা৷
অশ্বথামবিকর্ণঘোরমকরা দুর্যোধনাবর্তিনী
সৌত্তীর্ণা খলু পাণ্ডবৈ রণনদী কৈবর্তকে কেশবে॥৬॥
ভীষ্ম-দ্রোণ-তটা, জয়দ্রথ-জলা, গান্ধার-নীল-উপলা,
শল্য-গ্রাহবতী, কৃপেণ, বহনী, কর্ণেন, বেলা-আকুলা,
অশ্বথাম-বিকর্ণ-ঘোর-মকরা, দুর্যোধন-আবর্তিনী,
সা, উত্তীর্ণাঃ, খলু, পাণ্ডবৈঃ, রণ-নদী, কৈবর্তকে, কেশবে ॥৬॥
সরলার্থ:- ভীষ্ম ও দ্রোণ যে যুদ্ধরূপ নদের তট, জয়দ্রথ যার জল, গান্ধার (গান্ধার-রাজ-শকুনী) যাতে পিচ্ছিল নীলপ্রস্তর, শল্য যাতে কুমীর, কৃপাচার্য যাতে প্রবাহস্বরূপ, কর্ণ যার তীরপ্লাবী তরঙ্গ, অশ্বথামা ও বিকর্ণ যাতে ভীষণ মকরসদৃশ, দুর্যোধন যার আবর্ত সেই রণনদী কেশব কর্ণধার হওয়ায় পাণ্ডবেরা নিশ্চিতরূপে উত্তীর্ণ হয়েছে ॥৬॥
পারাশর্যবচঃসরোজমমলং গীতার্থগন্ধোৎকটং
নানাখ্যানককেশরং হরিকথাসম্বোধনাবধিতম্ ৷
লোকে সজ্জনষট্ পদৈরহরহঃ পেপীয়মানং মুদা
ভূয়াদ্ভারতপঙ্কজং কলিমলপ্রধ্বংসি নঃ শেয়সে ॥৭॥
পারাশর্য-বচঃ-সরোজম্, অমলম্, গীতা-অর্থ-গন্ধো-উৎকটম্,
নানা-আখ্যানক-কেশরম্, হরি-কথা-সম্বোধন-আবধিতম্,
লোকে, সৎ-জন-ষট্-পদৈঃ, অহঃ-অহঃ, পেপীয়মানম্, মুদা,
ভূয়াৎ, ভারত-পঙ্কজম্, কলিমল-প্রধ্বংসি, নঃ, শেয়সে ॥৭॥
সরলার্থ:- অমল কলিকলুষনাশক গীতার উপদেশরূপ সুগন্ধযুক্ত, নানা আখ্যানরূপ কেশরবিশিষ্ট, শ্রীকৃষ্ণের বাণীদ্বারা প্রবোধিত, জগতে সর্বদা সজ্জনরূপ ভ্রমরগণ কর্তৃক সানন্দে পুনঃপুনঃ পীয়্মান, পরাশরনন্দন বেদব্যাসের বাক্য-সরোবরে উৎপন্ন মহাভারতরূপ পদ্ম আমাদের কল্যাণের নিমিত্ত হোক ॥৭॥
মূকং করোতি বাচালং পঙ্গুং লঙ্ঘয়তে গিরিম্৷
যৎকৃপা তমহং বন্দে পরমানন্দমাধবম্ ॥৮॥
মূকম, করোতি, বাচালম্, পঙ্গুম্, লঙ্ঘয়তে, গিরিম্৷
যৎকৃপা, তম্, অহম্, বন্দে, পরমানন্দ-মাধবম্ ॥৮॥
সরলার্থ:- যাঁর কৃপা বোবাকে বাচাল করে, পঙ্গুকে পর্বত অতিক্রম করায়, সেই পরমানন্দ মাধবকে আমি বন্দনা করি ॥৮॥
যং ব্রহ্মাবরুণেন্দ্ররুদ্রমরুতঃ স্তুন্বন্তি দিব্যৈইঃ স্তবৈ-
র্বেদ্যৈইঃ সাঙ্গপদক্রমোপনিষদৈর্গায়ন্তি যং সামগাঃ
ধ্যানাবস্থিত-তদ্ গতেন মনসা পশ্যন্তি যং যোগিনো
যস্যান্তং ন বিদুঃ সুরগণা দেবায় তস্মৈ নমঃ ॥৯॥
যং ব্রহ্মা-বরুণ-ইন্দ্র-রুদ্র-মরুতঃ, স্তুন্বন্তি, দিব্যৈইঃ, স্তবৈঃ,
বেদ্যৈঃ, স-অঙ্গ-পদক্রম-উপনিষদৈঃ, গায়ন্তি, যম্, সাম-গাঃ,
ধ্যান-অবস্থিত-তদ্ গতেন, মনসা, পশ্যন্তি, যম্, যোগিনঃ,
যস্য, অন্তম্, ন, বিদুঃ, সুর-অসুরগণাঃ, দেবায়, তস্মৈ, নমঃ ॥৯॥
সরলার্থ:- ব্রহ্মা, বরুণ, ইন্দ্র, রুদ্র, ও মরুৎগণ দিব্য স্তবদ্বারা যাঁকে স্তুতি করেন, সামবেদগায়কগণ অঙ্গ, পদক্রম ও উপনিষদসহ সমগ্র বেদদ্বারা যাঁর স্তুতিগান করেন, যোগিগণ ধ্যানাবস্থিত তদ্ গতচিত্তে যাঁকে দর্শন করেন, দেবতা ও অসুরগণ যাঁর শেষ জানেন না, সেই দেবতাকে নমস্কার ॥৯॥
Post a Comment