শ্রী মহিষাসুরমর্দিনী স্ত্রোত্র
শ্রী মহিষাসুরমর্দিনী স্ত্রোত্রম্
শ্রী মহিষাসুরমর্দিনী স্তোত্রের পাঠের মাধ্যমে অনেকে তাঁর প্রাপ্তিতে বিশ্বাস করে এবং পবিত্র সংগীত ও মন্ত্র নিয়ে আনন্দ এবং শান্তির উপভোগ করেন।
অয়ি গিরিনন্দিনী নন্দিতমেদিনি বিশ্ববিনোদিনী নন্দিনুতে
গিরিবরবিন্ধ্যশিরোহধিনিবাসিনি বিষ্ণুবিলাসিনি জিষ্ণুনুতে ।
ভগবতি হে শিতিকন্ঠকুটুম্বিনি ভুরিকুটুম্বিনি ভুরিকৃতে
জয় জয় হে মহিষাসুরমর্দিনী রম্যকপর্দিনি শৈলসুতে ।।১
হে মাতঃ! তুমি গিরিরাজ হিমালয়ের আনন্দদায়িনী উমা। বিশ্ব ভূমণ্ডলের তুমি আনন্দ দায়িনী । শিবের প্রধান অনুচর নন্দী দেবও তোমার আরাধনা করেন । তুমি পর্বত শ্রেষ্ঠ বিন্ধ্যাচল পর্বতের শৃঙ্গে বাস করো , তুমিই বিষ্ণুর ভগিনী । দেবরাজ ইন্দ্রও তোমার শ্রী চরণে প্রণত হন। তুমি শিতিকন্ঠ অর্থাৎ শিবের পরিবার ভুক্ত এবং বিশ্বের সকলেই তোমার কুটুম্ব । তুমি বিশ্ববাসী সকলের সৌভাগ্যদায়িনী । হে হিমালয় দুহিতা জটাজুটধারিনী পার্বতী, তুমিই মহিষাসুর সংহার করেছ , তোমার জয় হোক । ১
সুরবরবর্ষিণি দুর্ধরর্ষিণি দুর্মুখমর্ষিণি হর্ষরতে
ত্রিভুবনপোষিণি শঙ্করতোষিণি কিল্বিষমোষিণি ঘোষরতে ।
দনুজনিরোষিণি দিতিসুতরোষিণি দুর্মদশোষিণি সিন্ধুসুতে
জয় জয় হে মহিষাসুরমর্দিনী রম্যকপর্দিনি শৈলসুতে ।।২
হে মাতঃ ! তুমি স্বর্গের দেবতাগণকে বরদান কর । দুষ্ট ও অশুভশক্তির দমন ও বিনাশসাধন কর । তুমি সদা আনন্দময়ী । ত্রিভুবনের তুমি পালয়িত্রী । তুমি শঙ্করের হ্লাদিনীশক্তিস্বরূপা । তুমি জগতের পাপবিমোচন কর আর ( অসুরদের বিরূদ্ধে ) রণ- উল্লাসে তুমি অট্টহাস্য করো । দানবদের দর্পহারিণী , তুমি তাদের প্রতি ক্রোধযুক্তা , তুমি দেবশত্রু দের পরাক্রম নাশ কর। হে হিমালয় দুহিতা জটাজুটধারিনী পার্বতী। তুমিই মহিষাসুর বধ করেছো । তোমার জয় হোক । ২
অয়ি জগদম্ব মদম্ব কদম্ব বনপ্রিয়বাসিনি
শিখরি শিরোমণি তুঙ্গহিমালয় শৃঙ্গনিজালয় মধ্যগতে ।
মধুমধুরে মধুকৈটভভঞ্জিনি হাসরতে
জয় জয় হে মহিষাসুরমর্দিনী রম্যকপর্দিনি শৈলসুতে ।। ৩
হে মাতা ! তুমি জগতের মাতা এবং আমারও তুমি জননী । সুদাসুস্মিতবদনা তুমি কদম্বপুস্প বনে মহানন্দে বাস কর । সুউচ্চ হিমালয় পর্বতের শিরোপরি রত্নস্বরূপ বিরাজিত গিরিশৃঙ্গ মধ্যে অবস্থিত তোমার আপন আবাস । তুমি সুমিষ্ট মধু পান কর । মধু ও কৈটভ এই দুই দৈত্যের তুমি বিমোহনকারিণী , কৈটভ দানবের বিনাশে তুমি বিজয়িনীর ন্যায় অট্টহাস্য হেসেছিলে । তুমি শৈলসুতা জটাজুটধারিণী পার্বতী । তুমিই মহিষাসুর বধ করেছো । তোমার জয় হোক । ৩
অয়ি শতখণ্ড বিখণ্ডিতরুণ্ড বিতুণ্ডিশুণ্ড গজাধিপতে
রিপুগজগণ্ড বিদারণচণ্ড পরাক্রমশুণ্ড মৃগাধিপতে ।
নিজভুজদণ্ড নিপতিতখণ্ড বিপাতিতমুণ্ড ভটাধিপতে
জয় জয় হে মহিষাসুরমর্দিনী রম্যকপর্দিনি শৈলসুতে ।।৪
অর্থাৎ- হে মাতঃ! তুমি দেবতাদের শত্রু সেই দানবদের শতখণ্ডে ছিন্নবিছিন্ন করে দিয়েছ, হস্তীমুখ দৈত্যদের মুণ্ড তাদের দেহ থেকে বিছিন্ন করে দিয়েছ । হে গজচর্মপরিহিতা দেবী চামুণ্ডে, তুমি চণ্ডের পরাক্রমশালী সব হস্তীগুলির গণ্ডদেশ বিদীর্ণ করে দিয়েছ, হে সিংহবাহনা দেবী দুর্গে ! তুমি সেনাধিপতি মুণ্ডকেও নিজ হস্তে বিখণ্ডিত করে শাস্তিদান করেছ ।তুমি শৈলসুতা জটাজুটধারিণী পার্বতী । তুমিই মহিষাসুর বধ করেছো । তোমার জয় হোক । ৪
অয়ি রণদুর্মদ শত্রুবধোদিতদুর্ধরনির্জর শক্তিভৃতে
চতুরবিচার ধুরীণমহাশিব দূতকৃত প্রমথাধিপতে ।
দূরীতদূরীহ দুরাশয়দুর্মতি দানবদূত কৃতান্তমতে ।
জয় জয় হে মহিষাসুরমর্দিনী রম্যকপর্দিনি শৈলসুতে ।।৫
অর্থাৎ- হে মাতঃ । তুমি যে সকল দেবদেবীগণের অদম্য শক্তিসমূহের যুগপৎ অধিকারিণী, তা রণক্ষেত্রে তুমি যেভাবে গর্বোদ্ধৃত ও দুর্ধর্ষ সব অসুর সেনাদের নিধন করেছ তার দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে । তুমি দেবতাদের ধুরন্ধর ও কুশল পরামর্শা প্রমথাধিপতি মহাশিবকে দূত হিসাবে দানবরাজ শুম্ভের কাছে প্রেরণ করেছ আর সেই দানবরাজের অতি পাপিষ্ঠ ও অতি দুর্বুদ্ধিসম্পন্ন দানবপ্রতিনিধিদের ( যাঁরা তার হয়ে যুদ্ধ করতে এসেছিল তাদের যমালয়ে প্রেরণ করেছ ।) । ।তুমি শৈলসুতা জটাজুটধারিণী পার্বতী । তুমিই মহিষাসুর বধ করেছো । তোমার জয় হোক । ৫
অয়ি শরণাগত বৈরিবধূবর বীরবরাভয় দায়করে
ত্রিভুবনমস্তক শূলবিরোধি শিরোহধিকৃতামল শূলকরে ।
দুমিদুমিতামর দুন্দুভিনাদমহোমুখরীকৃত দিগ্মকরে
জয় জয় হে মহিষাসুরমর্দিনী রম্যকপর্দিনি শৈলসুতে ।।৬
অর্থাৎ- হে মাতঃ! শত্রু দলের অর্থাৎ অসুরদের বীর সেনানীগণের মহিষীগণ তোমার শরণাগত হলে তুমি তাদের শ্রীহস্ত দিয়ে তাদের বরাভয় দান করে সেই সব সেনানীদের ক্ষমা করে দিয়েছো । ত্রিভুবনের শীরঃপীড়ার কারন অসুর প্রধান মহিষাসুরকে তুমি পবিত্র ত্রিশূল হস্তে নিয়ে দমন করেছো- এই দৃশ্য দেখে স্বর্গের দেবদেবীগণ আনন্দে উচ্চ শব্দে দুন্দুভি নাদ করেছিলেন । তুমি শৈলসুতা জটাজুটধারিণী পার্বতী । তুমিই মহিষাসুর বধ করেছো । তোমার জয় হোক । ৬
অয়ি নিজহুংকৃতিমাত্র নিরাকৃত ধুম্রবিলোচন ধূন্রশতে
সমরবিশোষিত শোণিতবীজ সমুদ্ভবশোণিত বীজলতে ।
শিবশিবশুম্ভ নিশুম্ভমহাহব তর্পিতভূত পিশাচরতে
জয় জয় হে মহিষাসুরমর্দিনী রম্যকপর্দিনি শৈলসুতে ।। ৭
অর্থাৎ- হে মাতঃ! তুমি সক্রোধে একটি মাত্র ‘হুম’ শব্দ উচ্চারন করতেই ধূম্রলোচন ও তার সৈন্যরা ভস্মীভূত হয়ে গেল । রণভূমিতে আহত নিহত অসুরদের গাত্র থেকে নির্গত রক্তকণিকা শুকিয়ে গিয়ে এক লোহিত লতাবৃক্ষের আকার নিয়েছিল, আর সেই শোণিত বীজলতার সঙ্গে ‘শিব শিব’ মন্ত্র উচ্চারনের মধ্যে নিহত শুম্ভ ও নিশুম্ভের দানবদেহ ভূতপ্রেতাদির পরিতৃপ্তির জন্য অর্পিত হোলো । তুমি শৈলসুতা জটাজুটধারিণী পার্বতী । তুমিই মহিষাসুর বধ করেছো । তোমার জয় হোক । ৭
ধনুরনুষঙ্গ রণক্ষণসঙ্গ পরিস্ফুরদঙ্গ নটৎকটকে
কনকপিশঙ্গ পৃষৎনিষঙ্গ রসদ্ভটশৃঙ্গ হতাবাটুকে ।
কৃতচতুরঙ্গে বলক্ষিতিরঙ্গ ঘটদ্বহুরঙ্গ রটদ্বটুকে ।
জয় জয় হে মহিষাসুরমর্দিনী রম্যকপর্দিনি শৈলসুতে ।।৮
অর্থাৎ- হে মাতঃ! তীরসহ ধনুকে জ্যা রোপণ করতে গিয়ে তোমার হাতের বালাগুলি ঝলমল করে নেচে উঠেছিল। তুমি অনায়েসেই তোমার তুণীর থেকে স্বর্ণকান্তি পিঙ্গল বর্ণের বাণগুলি শত্রুসেনার বৃথা কলরব থামিয়ে দিয়েছিলে । শত্রুদলের চতুরঙ্গ বাহিনীর সেনাদের বিরুদ্ধে রণভূমিতে তুমি কত অনায়েসেই না ক্রীড়াখেলার মতো যুদ্ধ করেছ। । তুমি শৈলসুতা জটাজুটধারিণী পার্বতী । তুমিই মহিষাসুর বধ করেছো । তোমার জয় হোক । ৮
আরো জানতে এখানে ক্লিক করুন: মহিষাসুরমর্দিনী স্ত্রোত্রম্ , HINDI SHIV TANDAV , Shreemad Bhagawat Geeta in Bengali, श्रीमद्भगवद्गीता - पहला अध्याय - अर्जुनविषादयोग
জয় জয় জপ্য জয়জয়শব্দ পরস্তুতি তৎপর বিশ্বনুতেঝণঝণ ঝিংঝিমি ঝিংকৃতনূপুর শিঞ্জিতমোহিত ভূতপতে ।
নটিত নটার্ধ নটী নট নায়ক নাটিতনাট্য সুগানরতে
জয় জয় হে মহিষাসুরমর্দিনী রম্যকপর্দিনি শৈলসুতে ।।৯
অর্থাৎ- তোমার উদ্দেশ্যে গীত বিশ্বের বন্দনাগান রণক্ষেত্রে উত্থিত তোমার জয়ধ্বনি ও তোমার স্তুতিগানের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে; তোমার পায়ের নূপুরের ঝনঝন ঝঙ্কার ধ্বনিতে দেবাদিদেব শিবও মুগ্ধ । তোমার এই বিজয় অভিযান উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত নট, নটী ও নায়কদ্বারা অনুষ্ঠিত নৃত্যগীতাদি ও সুমধুর সঙ্গীত ও বাদ্যধ্বনি মুখরিত অভিনীত নাট্যানুষ্ঠানে তুমি আনন্দিত হও । তুমি শৈলসুতা জটাজুটধারিণী পার্বতী । তুমিই মহিষাসুর বধ করেছো । তোমার জয় হোক । ৯
অয়ি সুমনঃ সুমনঃ সুমনঃ সুমনোহর কান্তিযুতে
শ্রিতরজনী রজনী রজনী রজনী রজনীকর বকত্রবৃতে ।
সুনয়ন বিভ্রমর ভ্রমর ভ্রমর ভ্রমর ভ্রমরাধিপতে
জয় জয় হে মহিষাসুরমর্দিনী রম্যকপর্দিনি শৈলসুতে ।। ১০
অনুবাদ- হে মাতঃ! সহৃদয় দিব্যধামবাসিগণের উদ্যানে প্রস্ফুটিত পারিজাত পুস্পের লোভনীয় উজ্জ্বলতার অধিকারিণী তোমার মুখমণ্ডল চন্দ্রের জ্যোৎস্নায় আলোকিত হয়ে ( তারই মতো ) সুন্দর, তোমার নয়নযুগল ভ্রমরাক্ষিসদৃশ , তোমার কণ্ঠে শোভামান যে পুস্পমাল্য তা ভ্রমরে ভ্রমরে আচ্ছাদিত থাকায়, তুমি নিজেই ‘ভ্রমর’ নামধেয়া অথবা ‘ভ্রমরদের’ ঈশ্বরীরূপে পরিগণিতা । । তুমি শৈলসুতা জটাজুটধারিণী পার্বতী । তুমিই মহিষাসুর বধ করেছো । তোমার জয় হোক । ১০
সহিতমহাহব মল্লমতল্লিক মল্লিতরল্লক মল্লরতে
বিরচিত বল্লিক পল্লিক ঝিল্লিক ভিল্লিক বর্গবৃতে ।
সিতকৃতফুল্ল সমুল্লসিতারুণতল্লজ পল্লব সল্ললিতে
জয় জয় হে মহিষাসুরমর্দিনী রম্যকপর্দিনি শৈলসুতে ।। ১১
অর্থাৎ- হে মাতঃ! তুমি জুঁইফুলের লতার মতো কোমল হয়েও বহুবিধ মল্লযুদ্ধ বিশারদ যোদ্ধার শক্তিকেও হার মানিয়েছো । কিন্তু তবু মধুমক্ষিকাকুলে সমাকীর্ণ জুঁইফুলে সুসজ্জিতা পল্লিবালার মতো সদ্যজাত ও ঈষৎলাভের কচিকচি পত্রপল্লব দ্বারা বেষ্টিতা মহানন্দে পরিপূর্ণা তুমি অতি সুন্দর । তুমি শৈলসুতা জটাজুটধারিণী পার্বতী । তুমিই মহিষাসুর বধ করেছো । তোমার জয় হোক । ১১
অবিরল গণ্ডগলম্মদমেদুর মত্তমতঙ্গজরাজপতে
ত্রিভুবনভূষণ ভূতকলানিধি রূপপয়োনিধি রাজসুতে ।
অয়ি সুদতীজন লালসমানস মোহনম্মথ রাজসুতে
জয় জয় হে মহিষাসুরমর্দিনী রম্যকপর্দিনি শৈলসুতে ।। ১২
অর্থাৎ- হে মাতঃ! তুমি গণ্ডদেশ বেয়ে অবিরল ধারায় স্নিগ্ধ অশ্রুধারা বহমান এমন সব রাজকীয় মদমত্ত হস্তীর অধিকারিণী, ত্রিভুবন তোমার ভূষণ , সর্ব বিধ কলা শিল্পের আধার এবং সৌন্দর্যের পয়োধিবিশেষ তুমি গিরিরাজকণ্যা এবং তুমি যেন মদন দেবের শর বিশেষ, যা তোমার পূজারতাদের মনে তোমার প্রতি মোহ উৎপন্ন করে দেয়। তুমি শৈলসুতা জটাজুটধারিণী পার্বতী । তুমিই মহিষাসুর বধ করেছো । তোমার জয় হোক । ১২
কমলদলামল কোমলকান্তি কলাকলিতামল ভাললতে
সকলবিলাস কলানিলয়ক্রম কেলিচলৎকল হংসকুলে ।
অলিকুলসঙ্কুল কুবলয়মণ্ডল মৌলিমিলদ্বকুলালিকুলে
জয় জয় হে মহিষাসুরমর্দিনী রম্যকপর্দিনি শৈলসুতে ।। ১৩
এর অর্থ- হে মাতঃ। তোমার সুন্দর প্রশস্ত ললাট খানি পদ্ম পত্রের মতো অমলিন নিষ্কলঙ্ক , তুমি ক্রমবর্ধমান চন্দ্রকলার মতো উজ্জ্বল ও মনোহরণ কান্তিময়ী , সর্ব বিধ নৃত্যকলা ভঙ্গিমা বিলাসিত হংসগতিই তোমার চলনভঙ্গি । তোমার মস্তকের চূড়ার মতো বদ্ধ কেশে অলিকুল সমাবৃত বকুল ফুল, সেই মৌমাছির দল যেমন করে পদ্মফুলে দলে ভীড় করে ঠিক তেমন ভাবেই তারা সেই বকুল ফুলের দিকে ধাবমান । তুমি শৈলসুতা জটাজুটধারিণী পার্বতী । তুমিই মহিষাসুর বধ করেছো । তোমার জয় হোক । ১৩
করমুরলীরব বীজিতকূজিত লজ্জিতকোকিল মঞ্জুমতে
মিলিতপুলিন্দ মনোহরগুঞ্জিত রঞ্জিতশৈল নিকুঞ্জগতে ।
নিজগণভূত মহাশবরীগণ সদগুণসংভৃত কেলিতলে
জয় জয় হে মহিষাসুরমর্দিনী রম্যকপর্দিনি শৈলসুতে ।। ১৪
অর্থাৎ- হে মাতঃ! তোমার কণ্ঠস্বর হস্তধৃত বংশী ধ্বনির মতোই মধু আর সেই ধ্বনি মাধুর্য সুকণ্ঠ কোকিল দলকেও লজ্জা দেয় । তোমার নিবাস পর্বত শৃঙ্গের উপরে কুঞ্জবনে , যে কুঞ্জবন বনবালাদের সঙ্গীত মূর্ছনায় মুখরিত , তুমি সমসম্প্রদায়ভুক্তা সদগুনান্বিতা সরল বনবালিকা সমাবিষ্ট পর্বত প্রাঙ্গনে ক্রীড়াচঞ্চলময়ী । তুমি শৈলসুতা জটাজুটধারিণী পার্বতী । তুমিই মহিষাসুর বধ করেছো । তোমার জয় হোক । ১৪
কটিতটপীত দুকূলবিচিত্র ময়ূখতিরস্কৃত চন্দ্ররুচে
প্রণতসুরাসুর মৌলিমণিস্ফুরদংশুলসন্নখ চন্দ্ররুচে ।
জিতকণকাচল মৌলিমদোর্জিত নির্ভরকুঞ্জর কুম্ভকুচে
জয় জয় হে মহিষাসুরমর্দিনী রম্যকপর্দিনি শৈলসুতে ।। ১৫
অর্থাৎ- হে মাতঃ! তোমার কটিদেশে পরিহিত সূক্ষ্ম রেশমি বস্ত্র থেকে বিচ্ছুরিত রশ্মি পূর্ণচন্দ্রের জ্যোৎস্নাকেও ম্লান করে দেয়, তোমার পদাঙ্গুলির নখগুলিও চন্দ্রাকিরণের মতো সমুজ্জ্বল এবং তোমার চরণে প্রণামরতা দেবদেবীগণের মস্তকস্থিত মুকুটে শোভিত মণিরত্নের ঔজ্জ্বল্যের সঙ্গে তা তুলনীয় । তোমার পীনোন্নত পয়োধর দুটি হস্তীমুখের চেয়েও অধিকতর স্থূল এবং তা সুউচ্চ মেরু পর্বতের শৃঙ্গ অপেক্ষাও তীক্ষ্ণাগ্র । তুমি শৈলসুতা জটাজুটধারিণী পার্বতী । তুমিই মহিষাসুর বধ করেছো । তোমার জয় হোক । ১৫
বিজিতসহস্রকরৈক সহস্রকরৈক সহস্রকরৈকনুতে
কৃতসুরাতারক সঙ্গরতারক সঙ্গরতারক সূনুসুতে ।
সুরথসমাধি সমানসমাধি সমানসমাধি সুজাতরতে
জয় জয় হে মহিষাসুরমর্দিনী রম্যকপর্দিনি শৈলসুতে ।। ১৬
অর্থাৎ- হে মাতঃ ! তুমি অগণিত ( সহস্র সহস্র ) ভক্তের হস্তধৃত মাল্য দ্বারা পূজিতা, যে হাত সূর্যকে পরাস্ত করার মতো শৌর্যবীর্যের অধিকারী ; তোমার পুত্র কুমার কার্ত্তিক দেবতাদের পীড়নকারী তারকাসুরকে বধ করে দেবতাদের রক্ষা করেছিল আর কার্তিকেয় হলেন দেবসেনাপতি, রণক্ষেত্রের উজ্জ্বল তারকস্বরূপ ; তুমি রাজা সুরথ ও বৈশ্যসমাধির গভীর তপস্যায় তুষ্ট হয়েছিলে । । তুমি শৈলসুতা জটাজুটধারিণী পার্বতী । তুমিই মহিষাসুর বধ করেছো । তোমার জয় হোক । ১৬
পদকমলং করুণানিলয়ে বরিবস্যতি যোহনুদিনং সুশিবে
অয়ি কমলে কমলানিলয়ে কমলানিলয়ঃ স কথং ন ভবেৎ ।
তবপদমেব পরং পদমিত্যনুশীলয়তো মম কিং ন শিবে
জয় জয় হে মহিষাসুরমর্দিনী রম্যকপর্দিনি শৈলসুতে ।। ১৭
অর্থাৎ- হে মাতঃ ! তুমি করুণার আধার , তুমি সকল মঙ্গলকামিতা ও শুভলক্ষণাদির সঙ্গে সংশ্লিষ্টা । হে কমলে, যিনি নিজেই কমলার আবাসস্বরূপা , যে ভক্ত তোমার শ্রীচরণ কমলের পূজা করে সেকি কমলালয়ে ( বা ব্রহ্মালয়ে ) আশ্রয় লাভ করতে পারে না ? আমার আর কি চাই ? হে শিবা ( পার্বতী ), তোমার শ্রীচরণকমলের ধ্যান করা ছাড়া আর আমার অন্য কি আশ্রয় থাকতে পারে ? তুমি শৈলসুতা জটাজুটধারিণী পার্বতী । তুমিই মহিষাসুর বধ করেছো । তোমার জয় হোক । ১৭
কনকলসৎকল সিন্ধুজলৈরনুষিঞ্চতি তে গুণরঙ্গভুবং
ভজতি স কিং ন শচীকুচকুম্ভ তটীপরিরম্ভ সুখানুভবম্ ।
তব চরণং শরণং করবাণি নতামবাণি নিবাসি শিবম্
জয় জয় হে মহিষাসুরমর্দিনী রম্যকপর্দিনি শৈলসুতে ।। ১৮
হে মাতঃ! যে ভক্তগণ স্বর্ণাভবিচ্ছুরিত সিন্ধুবারি দিয়ে সিঞ্চন করে দেয় তোমার বেদি , তারা কি ইন্দ্রপত্নী শচীর মতো সুন্দরী ললনার বাহুবেষ্টনের সুখানুভূতিলাভের যোগ্য নয় ? কিন্তু ( তার আখাঙ্খা না করে ) বাগদেবী সরস্বতী কর্তৃক সেবিত মঙ্গলবিধায়ক তোমার শ্রীচরণযুগলের আমি শরণ গ্রহণ করি । তুমি শৈলসুতা জটাজুটধারিণী পার্বতী । তুমিই মহিষাসুর বধ করেছো । তোমার জয় হোক । ১৮
তব বিমলেন্দুকুলং বদনেন্দুমলং সকলং ননু কলয়তে
কিমু পুরুহূতপুরীন্দমুখী সুমুখীভিরসৌ বিমুখী ক্রিয়তে ।
মম তু মতং শিবনামধনে ভবতী কৃপয়া কিমুত ক্রিয়তে
জয় জয় হে মহিষাসুরমর্দিনী রম্যকপর্দিনি শৈলসুতে ।। ১৯
হে মাতঃ ! তোমার সুবিম্ল চন্দ্রকান্তি মূর্তিখানি তোমার ভক্তমণ্ডলীর মুখমণ্ডল থেকে সকল উদ্বেগ দূর করতে পারে । স্বর্গের অপ্সরাগণ তোমার বিমলকান্তি আননখানি দেখে শশিকলার প্রতিও বিমুখ হয়েছে । আমার মন এই বলে যে, তোমারই কৃপায় আমাদের মন ভগবান শিবের ধ্যানে মগ্ন হতে পেরেছে । তুমি শৈলসুতা জটাজুটধারিণী পার্বতী । তুমিই মহিষাসুর বধ করেছো । তোমার জয় হোক । ১৯
অয়ি ময়ি দীনদয়ালুতয়া কৃপয়ৈব ত্বয়া ভবিতব্যমুমে
অয়ি জগতো জননী কৃপায়সি যথাসি তথানুমিতসিরতে ।
যদুচিতমত্র ভবত্যুররী কুরুতাদূরুতাপমপাকুরুতে ।
জয় জয় হে মহিষাসুরমর্দিনী রম্যকপর্দিনি শৈলসুতে ।। ২০
অর্থাৎ- হে উমা ! করুণা ও কৃপাপরবশ হয়ে তুমি আমার প্রতি প্রসন্ন হও । তুমি যে মহাবিশ্বেশ্বরী, আমাদের সকলের ওপর তোমার অপার কৃপাবরিষণ থেকেই তা বোঝা যায়। আমার হৃদয়তাপ ও যন্ত্রণা নিবারণের জন্য তুমি যা উচিৎ বিবেচোনা কর তাই কর । তুমি শৈলসুতা জটাজুটধারিণী পার্বতী । তুমিই মহিষাসুর বধ করেছো । তোমার জয় হোক । ২০
Post a Comment