Header Ads


পঞ্চদেবতা ধ্যানমন্ত্র ও প্রণাম মন্ত্র

পঞ্চদেবতা ধ্যানমন্ত্র ও প্রণাম মন্ত্র

পূজা-উপাসনার একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হইল পঞ্চদেবতা পূজা। কথিত আছে, খ্রিস্টীয় অষ্টম শতাব্দীতে বৈদান্তিক ধর্মসংস্কারক আদি শঙ্কর এই বিশেষ পূজার প্রবর্তন করিয়াছিলেন। গণেশ, শিব, সূর্য, বিষ্ণু ও দুর্গা – এই পঞ্চ দেবদেবীর পূজাকেই বলা হয় পঞ্চদেবতা পূজা বা পঞ্চায়তন পূজা। এই পঞ্চদেবদেবী হিন্দুদের পঞ্চ সম্প্রদায়ের প্রধান দেবতা। বৈদিক দার্শনিক তত্ত্বের বিচারে, ইঁহারা কেহই পৃথক দেবতা নহেন, বরং একই সগুণ ব্রহ্মের পাঁচটি পৃথক রূপমাত্র।


শ্রী গনেশ ধ্যানমন্ত্র

ওঁ খর্বং স্থুলতনুং গজেন্দ্রবদনং লম্বোদরং সুন্দরম্।

প্রস্যন্দমদগন্ধলুব্ধ মধুপব্যালোল গণ্ডস্থলম্।।

দন্তাঘাতং বিদারিতারিরুধিরৈঃঃ সিন্দুরশোভাকরং।

বন্দে শৈলসূতাসূতং গণপতিং সিদ্ধিপ্রদং কামদম্।।


বঙ্গানুবাদঃ যিনি খর্বাকৃতি, স্থূলশরীর, লম্বোদর, গজেন্দ্রবদন অথচ সুন্দর; বদন হইতে নিঃসৃত মদগন্ধে প্রলুব্ধ ভ্রমরসমূহের দ্বারা যাঁহার গণ্ডস্থল ব্যাকুলিত; যিনি দন্তাঘাতে শত্রুর দেহ বিদারিত করিয়া তাহার দন্ত দ্বারা নিজ দেহে সিন্দূরের শোভা ধারণ করিয়াছেন; সেই পার্বতীপুত্র সিদ্ধিদাতা ও কামদাতা গণপতির ধ্যান করি।


মন্ত্রঃ ওঁ গং গনেশায় নমঃ


শ্রী গনেশ প্রণাম মন্ত্র

একদন্ত,মহাকায়ং লম্বোদরং গজাননম্।

বিঘ্ননাশকংং দেবং হেরম্বং প্রণমাম্য'হম্।।


বঙ্গানুবাদঃ যিনি একদন্তবিশিষ্ট, যাঁর বিশাল আকার, যিনি বিশাল উদরের মালিক, যাঁর মুখমন্ডল হস্তীর ন্যায়। সেই বিঘ্ননাশকারী হেরম্বদেবকে প্রণামজানাই।।


গণেশের প্রার্থনা মন্ত্রঃ

ওঁ দেবেন্দ্র- মৌলি- মন্দার মকরন্দ কণারুণাঃ ।

বিঘ্নং হরন্তু হেরম্বচরণাম্বুজরেণবঃ ।।


বঙ্গানুবাদঃ দেবরাজ ইন্দ্রের মস্তকে বিরাজিত মন্দারপুষ্পের পরাগসমূহের দ্বারা রক্তিম হেরম্বের পাদপদ্মের রেণুসমূহ আমার বিঘ্নহরণ করুক।


💐💐💐💐💐

শিবের ধ্যান

ওঁ ধ্যায়েন্নিত্যং মহেশং রজতগিরিনিভং চারুচন্দ্রাবতসং।

রত্নাকল্লোজ্বলাঙ্গং পরশুমৃগবরাভীতিহস্তং প্রসন্নম্ ।।

পদ্মাসীনং সমস্তাৎ স্ততমমরগণৈ র্ব্যাঘ্রকৃত্তিং বসানং।

বিশ্বাদ্যং বিশ্ববীজং নিখিলভয়হরং পঞ্চাবক্ত্রং ত্রিনেত্রম্ ।।


বঙ্গানুবাদঃ রজত গিরির ন্যায় শুভ্রোজ্জল কান্তি শিবকে ধ্যান করি । মনোহর চন্দ্রকলা তাঁর ললাট ভূষণ , রত্নময় ভূষনে তাঁর দেহ সমুজ্জ্বল । তদীয় হস্ত দ্বয়ে পরশু ও মৃগ মুদ্রা,বর ও অভয়মুদ্রা । তিনি ব্যাঘ্র চর্ম পরিধান করে পদ্মাসনে প্রফুল্ল ভাবে সমাসীন । দেব গন চতুর্দিক হতে তাঁর স্তব স্তুতি করছেন । তিনিই বিশ্বের আদি ও মূল কারন এবং নিখিল ভয়নাশক। তিনি পঞ্চ আনন বিশিষ্ট এবং তাঁর প্রতি আননে তিন তিনটি নয়ন ।


মন্ত্রঃ ওঁ নমঃ শিবায়ঃ


শিবের প্রনাম মন্ত্র

ওঁ মহাদেব মহাত্মানং মহাযোগিনমীশ্বরম্।

মহাপাপহরং দেবং মকারায় নমো নমঃ।।

ওঁ নমস্তুভ্যাং বিরুপাক্ষ নমস্তে দিব্যচক্ষুষে।

নমঃ পিনাকহস্তায় দণ্ডপাশাংসিপাণয়ে।।

নমঃ ত্রিশূলহস্তায় বজ্রহস্তায় বৈ নমঃ।

নমঃ স্ত্রৈলোক্যনাথায় ভূতানাং পতয়ে নমঃ।।

ওঁ বাণেশ্বরায় নরকার্ণবতারণায়।

জ্ঞানপ্রদায় করুণাময় সাগরায়।।

কর্পূরকুন্দধবলেন্দু জটাধরায়।

দারিদ্র্য-দুঃখদহনায় নমঃ শিবায়।।

নমঃ শিবায় শান্তায় কারণত্রয়হেতবে।

নিবেদয়ামি চাত্মানং ত্বং গতিম্ পরমেশ্বর ।।


💐💐💐💐💐

জয়দুর্গার ধ্যান

ওঁ কালাভ্রাভাং কটাক্ষৈররিকুলভয়দাং মৌলীবন্ধেন্দুরেখাম্ ।

শঙ্খং চক্রং কৃপাণং ত্রিশিখমপি করৈরুদ্বহন্তীং ত্রিনেত্রাম্ ।

সিংহাস্কন্ধাধিরুঢ়াং ত্রিভুবনমখিলং তেজসা পুরয়ন্তীম্ ।

ধ্যায়েদ্ দুর্গাং জয়াখ্যাং ত্রিদশপরিবৃতাং সেবিতাং সিদ্ধিকামৈঃ ।।

অনুবাদঃ- কালাভ্র আভাং ( এর অর্থ দুই প্রকার হয়, একটি স্বর্ণ বর্ণা অপরটি ঘোর মেঘের ন্যায় ) , কটাক্ষে শত্রুকূলত্রাসিণী , কপালে চন্দ্রকলা শোভিতা, চারি হস্তে শঙ্খ, চক্র, খড়্গ ও ত্রিশূল ধারিণী, ত্রিনয়না, সিংহোপরি সংস্থিতা , সমগ্র ত্রিভুবন স্বীয় তেজে পূর্ণকারিণী , দেবগণ- পরিবৃতা , সিদ্ধসঙ্ঘ সেবিতা জয়াখ্যা দুর্গার ধ্যন করি ।


মন্ত্র ওঁ দুর্গে দুর্গে রক্ষণি স্বাহা


জয়দুর্গার প্রনাম মন্ত্র

ওঁ সর্বমঙ্গলমঙ্গল্যে শিবে সর্বাথসাধিকে ।

শরণ্যে ত্র্যম্বকে গৌরি নারায়ণি! নমোহস্তুতে ।।

অনুবাদঃ ॐ ,আপনি সর্বমঙ্গলস্বরূপা,সর্বাভীষ্টসাধিকা,একমাত্র স্মরণযোগ্য ,ত্রিভুবন জননী বা ত্রিনয়না (সূর্যচন্দ্রাগ্নিলোচনা ) ও গৌরবর্ণা | হে নারায়ণী ,আপনাকে প্রণাম করি |।


💐💐💐💐💐

বিষ্ণুর ধ্যান

ওঁ উদ্যৎকোটিদিবাকরাভমনিশং শঙ্খং গদাং পঙ্কজং চক্রং।

বিভ্রতমিন্দিরা-বসুমতী-সংশোভিপার্শ্বদ্বয়ম্ ।।

কোটিরাঙ্গদহারকুন্ডলধরং পীতাম্বরং কৌস্তভোদ্দীপ্তং।

বিশ্বধরং স্ববক্ষসি লসচ্ছ্রীবৎসচিহ্নং ভজে ।।

অনুবাদঃ উদিত কোটি সূর্যসম গাত্রবর্ণ ,যার করে শঙ্খ গদা পদ্ম ও চক্র বিরাজ করছে ,ইন্দিরা(শ্রী লক্ষী ) ও বসুমতি দুই পার্শে সুশোভিত ,যিনি হার ,কুন্ডল তথা পীতাম্বর ধারণ করে আছেন,বিশ্বকে ধারণকারী ,বক্ষদেশে যার কৌস্তভমনি ও মহর্ষি ভৃগুর পদ চিহ্ন ।।


মন্ত্রঃ ওঁ নমো বিষ্ণবে


ভগবান বিষ্ণুর প্রণাম মন্ত্র

ওঁ নমো ব্রাহ্মণ্যদেবায় গো- ব্রাহ্মণ্যহিতায় চ ।

জগদ্ধিতায় কৃষ্ণায় গোবিন্দায় নমো নমঃ ।।

পাপোহহং পাপকর্মাহং পাপাত্মা পাপসম্ভবঃ ।

ত্রাহি মাং পুন্ডরীকাক্ষং সর্বপাপহরো হরি ।।


অনুবাদঃ অর্থাৎ - প্রণাম ব্রহ্মদেব গো ব্রাহ্মন হিতকরী ,জগৎধারণকারী কৃষ্ণ গোবিন্দ প্রণাম ,আমি পাপী পাপকর্মকারী পাপাত্মা কেবল পাপসম্ভব আমার দ্বারা ত্রাণ করুন পুণ্ডরীকাক্ষ ,সর্ব পাপ হরণ করুন হরি ।


জগৎ পালন কর্তা শ্রীহরি বিষ্ণু দেবের চক্রের নাম সুদর্শন ,শঙ্খের নাম পাঞ্চজন্য ,গদার নাম কামদৌকি ও মনির নাম কৌস্তভ ।

💐💐💐💐💐

সূর্য ভগবানের ধ্যান

ওঁ রক্তাম্বুজাসনমশেষগুণৈসিন্ধুং, ভানুং সমস্তজগতামধিপং ভজামি ।।

পদ্মদ্বয়াভয়বরান্ দধতং করাব্জৈ, র্মাণিক্যমৌলিমরুণাঙ্গরুচিং ত্রিনেত্রম্ ।।


অনুবাদঃ রক্তপদ্মাসনে উপবিষ্ট অশেষ গুনের সাগর ,ভানু সমস্ত জগতের অধিপতি ,দুই হস্তে পদ্ম ও অপর দুই হস্তে বরাভয় মুদ্রাধারণকারী ,মাণিক্য শোভা পাচ্ছে মস্তকে যার ও যিনি ত্রিনেত্র ।


মন্ত্র হ্রাং হ্রীং সঃ ওঁ নমো ভগবতে শ্রীসূর্য্যায়


সূর্যের প্রণাম মন্ত্র

ওঁ জবাকুসুমসঙ্কাশং কাশ্যপেয়ং মহাদ্যুতিম ।

ধান্তারীং সর্বপাপঘ্নং প্রণতোহস্মি দিবাকরম্ ।।


অনুবাদঃ আপনার জবা কুসুমসম রক্ত বর্ণ গাত্র ,কাশ্যপ মহর্ষি পুত্র আপনি ,আপনি আমার সর্ব পাপ হরণ করুন ,আপনাকে প্রণাম হে দিবাকর ।


💐💐💐💐💐

1 টি মন্তব্য:

Blogger দ্বারা পরিচালিত.